"একটি গল্প বলি" মন দিয়ে পড়তে হবে যদি আপনার ধৈর্য হারিয়ে না যায়।
মালদ্বীপ আওয়ামী লীগ গঠন করার শুরুতেই একটি ছেলে অতি বিনয়ী শান্ত ভদ্র
মার্জিত আমার একান্তভক্ত অনুরাগী অনুসারী হিসেবেই কাজ করেছে দীর্ঘদিন।
সে মালদ্বীপ এসেছে প্রায় ১৫ বছরের উপরে। যত টাকা কামিয়েছে সব মা বাবাকে
দিয়েছে। ভাইবোনদের লেখা পড়ার খরচাদি থেকে শুরু করে গোটা পরিবারকেই তাঁর অর্জিত
অর্থে তাজা করে তুলেছিল। তার মা বাবা একদিন ঐ ছেলেটির বিয়ের আবদার করলো এবং মেয়েও
ঠিক করে ফেললো। মেয়ের বাবা সৌদি থাকে। টাকা পয়সা যশ মোটামুটি মন্দ নয়; মেয়ে কিন্তু ঐ ছেলেটির মা বাবা দেখতে
দেয়নি এবং কথাও বলতে দেয়নি। ছুটি নিয়ে বাড়ী গেল এবং বিয়ের কাজ সেরে ফেললো। বাসর
ঘরে যেয়ে ছেলেটি বুঝতে পারছে যে মেয়েটি জীবনে স্কুলেও যায়নি এবং দেখতেও তেমন নয়;
কালোর মধ্যেও কিছু আলো থাকে । এ মেয়ের গায়ে তারও ছোঁয়া লাগেনি। সবই
নিয়তির খেলা এবং ভাগ্যের লিখন ভেবে মেনে নেয়। বাড়ীতে থাকা ঐ তিন মাসের মধ্যেই তার
নিজের অজান্তে সে একটি মেয়ের বাপ হতে যাচ্ছে জানতে পারে এবং একটি মেয়ে হয়।
এ গেল তার জীবনসঙ্গী নির্ধারণে মাতা পিতার আদেশ শিরোধার্যের পর্ব।
এবার বলি পারিবারিক সহায় সম্বল সম্পত্তি প্রসংগেঃ
মালদ্বীপ থাকাকালীন ছেলেটির ছোট ভাইদেরও তারই অর্থে মালদ্বীপ এনে দুইজনকে
চাকুরী দিয়েছে। এর মধ্যে প্রতি মাসে বাড়ীতে সে নিয়মিত মা বাবা ও সংসারের খরচের
জন্য টাকা প্রেরণ করেছে। অর্থাৎ তার জীবনের সমস্ত অর্জিত অর্থ সে মা বাবা ভাইবোন
তথা গোটা পরিবারের জন্য ব্যয় করে নিজের ব্যাংকে একটি একাউন্টও করেনি এবং একটি কানা
কড়িও ব্যাংকে জমা রাখেনি। কারন মা বাবার প্রতি সন্তানের যে কর্তব্যবোধ তাকে সে মনে
প্রাণে শ্রদ্ধার সাথে একনিষ্ঠতার সাথেই পালন করেছে। কদিন আগে বাড়ী গিয়েছিল। মা
বাবা সম্পত্তি ভাগ বন্টন করে দিয়েছে সব সন্তানদের অথচ যে বড় ছেলে সারা জীবন রুজি
রোজগার করে এত বড় বিশাল সংসারটিকে টিকিয়ে রেখেছিল। সেই বড় ছেলেকে মা বাবা বলল “এখানে
তোকে দেবার মত কিছু নেই-তুই কোন অংশ পাবিনা” ।
সে চলে আসে মালদ্বীপ । দু’দিন আগে দেখা হল-বলল “স্যার আমার সব শেষ”। এই বলে
বাই সাইকেলে বসেই পথচারীদের সামনেই চোখের পানি ফেলে দিল।
শুধু বললাম –তোমার
আল্লাহ্ তোমাকে দিয়েছিল এবং আরো দেবে। মা বাবার প্রতি যেমন সন্তানের দায় দায়িত্ব
রয়েছে, ঠিক তেমনিভাবেই সন্তানের ক্ষেত্রেও মা বাবার দায় দায়িত্ব রয়েছে। যার যার
পাওনা হক সঠিক ভাবে বুঝিয়ে না দিলে মহান আল্লাহ্ও তাদের ক্ষমা করবেন না, এ কথা
আল্লাহ্ ক্বোর’আন পাকে স্পষ্ট ঘোষনা দিয়েছেন।
বন্ধুরা গল্পটি কেন লিখলাম
এখন আসি সেদিকে। আমি মুক্তি ১৯৬৭ ৬৮ থেকেই এই আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু নৌকার সাথে নিজেকে
একাকার করে দিয়েছি। ভালোভাবে লেখাপড়াও হয়নি এই আওয়ামী লীগের জন্য। আমার সারা
জীবনের অর্জন ক্ষুদ্র হলেও ওটুকুই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া-মহান মুক্তিযুদ্ধে
ভারতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধার প্রশিক্ষণ নেয়া। আমার সারা জীবনের সে অর্জিত সম্পদ
আওয়ামী লীগ কেড়ে নিতে পারে না যেমন পারে না ঐ ছেলেটির মা বাবা পৈতৃক সম্পত্তি থেকে
তাকে বঞ্ছিত করতে।
আমি দেশবাসীর নিকট আ ক ম
মোজামেল হক ও সুবিদ আলী ভুইয়ার বিচার চাই। আপনারা বিচার করবেন কিনা? সেটা আপনাদের
দায়িত্ব। বিচার না পেলে কি করবো সেটা ভবিষ্যতই বলে দেবে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
No comments:
Post a Comment